বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪০ অপরাহ্ন

ডায়াবেটিসে ভুগছেন ৩৫ লাখ নারী!

রিপোর্টারের নাম
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭
  • ৬৪৬ বার পঠিত
ফাইল ছবি

দেশের ৩৫ লাখ নারী ডায়াবেটিসে ভুগছেন। আন্তজার্তিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) এর অনুমিত পরিসংখ্যান অনুসারে বর্তমানে দেশে ৭১ লাখ নারী, পুরুষ ও শিশু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আক্রান্তদের অর্ধেকই মহিলা।

ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ১০০ জনের মধ্যে ২০ জন মহিলাই গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যাদের অর্ধেকের বেশি পরবর্তীকালে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন।

তারা বলেন, যেসব মায়ের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকে তাদের শিশুদেরও পরবর্তী সময়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি অনেক বেশি। এসব বিবেচনায় রেখে এবার আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন মহিলা ডায়াবেটিক রোগীদের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।

নারীদের ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পরিকল্পিত গর্ভধারণের ওপর এবার বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

আগামীকাল (মঙ্গলবার) বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও দিবসটি যথাযথভাবে পালন করতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনাসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতি (বাডাস) সোমবার রাজধানীর শাহবাগে বারডেম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাডাস সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ।

‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’র এবারের প্রতিপাদ্য ‘সকল গর্ভধারণ হোক পরিকল্পিত’।

ডা. আজাদ জানান, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ‘গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা’ দিতে বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা দিতে সারাদেশে এরই মধ্যে ৫০টি ‘গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা কেন্দ্র’ খোলা হয়েছে, যেখানে চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিনামূল্যে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হবে।

১৪ নভেম্বর থেকে এসব কেন্দ্রে মাত্র ৬০০ টাকায় ‘গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা’ অব্যাহত থাকবে। এসব সেবার মধ্যে রয়েছে- গর্ভধারণ সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি পরীক্ষার পাশাপাশি যথাযথ চিকিৎসা ও পুষ্টিবিষয়ক পরামর্শ, বিনামূল্যে মোবাইল হেল্পলাইনের মাধ্যমে পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অন্যান্য সেবাগ্রহণকারীর সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ।

ইতোমধ্যে প্রায় ৪০০ কাজি ও ৩০০ চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

ডা. আজাদ আরও বলেন, গর্ভবতী মায়েদের অপুষ্টি থাকলে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। সে-কারণে বিয়ের সময় মেয়েদের এ ব্যাপারে সচেতন করতে পারলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে। সরকারের গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি ‘গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা’ নিশ্চিত করতে পারলে প্রসবকালীন নারী ও শিশুমৃত্যুর হার কমানো এবং নারীসহ আগামী প্রজন্মকেও ডায়াবেটিসের ভয়াবহ প্রকোপ থেকে অনেকটা রক্ষা করা সম্ভব হবে।

এছাড়া মসজিদে খুতবার মাধ্যমে এবং অন্যান্য ধর্মশালায়ে ধর্মীয় নেতাদের মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের বাণী ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ডায়াবেটিস সারা জীবনের রোগ। এ রোগ কখনো সম্পূর্ণভাবে সারে না। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নির্ধারিত নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চললে এবং প্রয়োজনে পরিমাণ মতো ওষুধ গ্রহণ করলে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ ও প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা থেকেও রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

ডায়াবেটিস আছে এমন রোগীদের অন্তত শতকরা ৫০ ভাগই জানেন না যে, তাদের ডায়াবেটিস আছে- সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..